Untitled

প্রাচীন ভূপতি তুমি অতি বিচক্ষণ |
বাহবলে জিনেছ সকল ত্রিভূবন ||
ধর্মাধর্ম রাজধর্ম তোমাতে বিদিত |
তব মুখে শুনিব কিঞ্চিত্ রাজনিত ||
দশানন বলে রাম সংশয় জীবন |
কহিতে বদনে নাহি নিঃসরে বচন ||
যতক্ষণ বাঁচি প্রাণে আছি সচেতন |
কহিব কিঞ্চিত নীত করহ শ্রবণ ||

করিতে উত্তম কর্ম বাঞ্ছা যদি হবে |
আলস্য ত্যজিয়া তাহা তখনি করিবে ||
ফেলিয়া রাখিবে যদি হয় মন্দ কাজ |
প্রমাণ তাহার কহি শুন রঘুরাজ ||
একদিন আসি আমি স্বর্গপুর হৈতে |
যমপুরী দৃষ্ট হৈল থাকি নিজ রথে ||
শূণ্য হৈতে দেখিলাম যমের ভূবন |
তিন দ্বারে নানা স্থানে আছে সাধুগণ ||
দেখিলাম দক্ষিণেতে পাতকীর থানা |
দিবা কিবা রাত্রি কিছু নাহি যায় জানা ||
অন্ধকার চৌরাশীটা নরকের কুণ্ড |
তাহাতে ডুবায়ে ধরে পাতকীর মুণ্ড ||
পরিত্রাহি ডাকে পাপী বিষম প্রহারে |
না দেয় তুলিতে মাথা যমদূতে মারে ||
তাহা দেখি বড় দয়া হইল মনেতে ||
ঘুচাব পাপীর দুঃখ শমনের হাতে ||
পাপীর দুর্গতি আর দেখা নাহি যায় |
এত ভাবি সেই দিন এলেম লঙ্কায় ||
পুরাব নরককুণ্ড নিত্য করি মনে |
আজি কালি করিয়া রহিল বহুদিনে ||
হেলায় রহিল পড়ে না হৈল পূরণ |
তারপর তব সঙ্গে বাধিল এ রণ ||

আর এক কথা কহি দেখ বিদ্যমান |
সূর্পনখার লক্ষণ কাটিল নাক কাণ ||
সেই আসি উপদেশ কহিল আমারে |
তাহার বুদ্ধিতে আমি সীতা আনি হরে ||
একবার ভাবিলাম আপন মনেতে |
আজি কালি নহে সীতা আনিব পশ্চাতে ||
আবার বিচার করি দেখিলাম ভেবে |
হেলায় রাখিব পাছে আনা নাহি হবে ||
অতএব শীঘ্রগতি হরে আনি সীতে |
সর্বনাশ হৈল মম সীতার জন্যেতে ||
এক লক্ষ পুত্র মরে সোওয়া লক্ষ নাতি |
আপনি মরিনু শেষে লঙ্কা অধিপতি ||
যদি সীতা না আনিতাম ভেবে চিন্তে মনে |
তবে কেন সবংশে মরিব তব বাণে ||
এইমত রাবণ কহিল নীতি কথা |
কহিতে কহিতে হৈল জিহ্বার জড়তা ||
শ্রীচরণে দৃষ্টি করি প্রাণত্যাগ কৈল |
রাবণের মৃত্যু কৃত্তিবাস বিরচিল ||

Rate this poem: 

Reviews

No reviews yet.